কুষ্টিয়া অফিসঃ
পারিবারিক কলহের জেরে কুষ্টিয়ার মিরপুরে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে স্বাম আলামিন ইসলামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরের দিকে কুষ্টিয়ার বিশেষ জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম এ রায় দেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আলামিন (৪৩) কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শাকদহচর গ্রামের আহাদ আলীর ছেলে। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণার পর পরই দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদেরকে পুলিশ পাহারায় জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। এ মামলার অপর আসামি ও আলামিনের প্রথম স্ত্রী জানেরা খাতুনের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমানিত না হওয়া তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর পূর্বে শিউলি খাতুনকে বিয়ে করেন আসামি আলামিন। তাদের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকে স্ত্রীকে নিয়ে মিরপুর উপজেলার হালসা গ্রামের হালসা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের (বর্তমান হালসা বাজার জয় চিকিৎসালয়) দ্বিতীয় তলায় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। পারিবারিক কলহের জেরে ২০২২ সালের ২৯ অক্টোবর রাতে স্ত্রী শিউলি খাতুনকে (২৮) শ্বাসরোধ করে হত্যা করে আলামিন। পরে আশপাশের লোকজন টের পায়। খোঁজ পেয়ে মিরপুর থানা পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। নিহতের বাবা আসাদুল বাদী হয়ে থানার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে মামলার তদন্ত শেষে আসামি আলামিনের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। এরপর আদালত এ মামলায় সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। সাক্ষীদের সাক্ষ্য-প্রমাণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
আদালতের পিপি অনুপ কুমার নন্দী বলেন, স্ত্রীকে হত্যা মামলায় দোষী প্রমাণিত হওয়ায় স্বামী আলামিনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আলামিন ইসলাম ডাক্তার পরিচয়ে দীর্ঘদিন কুষ্টিয়া একতা হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রাকটিস করতেন। ২০২০ সালে জুন মাসের ১৫ তারিখে সেখান থেকে গ্রেফতার করে কুষ্টিয়া মডেল থানা পুলিশ। এলাকাবাসী তাকে এমবিবিএস ডাক্তার হিসেবে চিনতেন।
মিরপুর উপজেলার আমবাড়িয়া ইউনিয়নের শাকদহরচর এলাকায় ঔষধের দোকান ছিল। সেখান থেকে তার প্রতারণা শুরু। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে প্রবাসীর স্ত্রীকে টার্গেট করে টাকা ও মূল্যবান জিনিসপত্র হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আছে।