স্মার্টফোন ছাড়া কিশোরদের জীবন কেমন হবে

তোমার কি একটা স্মার্টফোন আছে? থাকারই কথা, না হলে লেখাটা পড়ছ কীভাবে? অবশ্য ট্যাব, ল্যাপটপ বা কম্পিউটারেও পড়তে পারো। এবার কল্পনা করো, তোমার স্মার্টফোনটা ২১ দিন নিয়ে আটকে রাখা হলো। এই সময়ের মধ্যে মোবাইলটা একবার ছুঁয়েও দেখতে পারবে না। কেমন লাগবে তোমার? মেজাজ কি খিটখিটে হয়ে যাবে? আচরণ পরিবর্তন হবে? সম্প্রতি এমনই একটা গবেষণা করা হয়েছে ইংল্যান্ডের কোলচেস্টারের একটা স্কুলের ২৬জন শিক্ষার্থীকে নিয়ে। উদ্দেশ্যে, এই শিক্ষার্থীদের জীবনযাপন তথা আচরণে কোনো প্রভাব পড়ে কি না, তা খুঁজে দেখা।

কার্যকরী স্মৃতি মানে কোনো কিছুর কারণে তোমার মন অন্যদিকে থাকলেও কাজটা তুমি ঠিকই করতে পারবে। যেমন সিড়ি দিয়ে নামার সময় বন্ধুর সঙ্গে কোনো কিছু নিয়ে দিব্যি আলাপ চালিয়ে যেতে পারবে।

ইংল্যান্ডের স্টানওয়ে স্কুলের শিক্ষার্থীদের বয়স ছিল ৮-১০ বছরের মধ্যে। তারা ৩ সপ্তাহের জন্য নিজেদের স্মার্টফোন একটা কাচের বাক্সে আটকে রাখতে সম্মতি দিয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির গবেষকেরা। এই সম্পূর্ণ পরীক্ষাটি ডকুমেন্টরি টিভি শোয়ের জন্য রেকর্ড করে রাখা হয়েছে। আর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রাপ্তবয়স্ক উপস্থাপকেরাও স্বেচ্ছায় নিজেদের স্মার্টফোন জমা রেখেছিলেন বাক্সে।

২১ দিন পরে শিক্ষার্থীদের সার্বিক অবস্থা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, স্মার্টফোন ব্যবহার না করায় তারা কিছু সুবিধা পেয়েছে। গড়ে তারা ৫০ মিনিট আগে ঘুমাতে গেছে। আগের তুলনায় ২০ মিনিট দ্রুত ঘুমিয়ে পড়েছে। অর্থাৎ, স্মার্টফোন ব্যবহার না করে তারা বেশি সময় বিশ্রাম নিতে পেরেছে। এতে তাদের মেজাজ তুলনামূলক ভালো ছিল। কারণ, বিশ্রাম স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। স্লিপ ট্র্যাকিং ডিভাইস ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের ঘুম পর্যবেক্ষণ করে এসব তথ্য জানিয়েছেন গবেষকেরা।

শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, স্মার্টফোন ব্যবহার না করে তারা কম উদ্বিগ্ন ছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন বিষয় দেখে মাঝেমধ্যে হতাশ হয়ে পড়ত। এরকম হতাশাও কমেছে। পরিবর্তে তারা পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পেরেছে। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা আগের চেয়ে ক্লাসে বেশি মনযোগী ছিল।

গবেষণায় দেখা গেছে, শিক্ষার্থীদের কার্যকরী স্মৃতি সামান্য বৃদ্ধি পেয়েছে। কার্যকরী স্মৃতি মানে কোনো কিছুর কারণে তোমার মন অন্যদিকে থাকলেও কাজটা তুমি ঠিকই করতে পারবে। যেমন সিড়ি দিয়ে নামার সময় বন্ধুর সঙ্গে কোনো কিছু নিয়ে দিব্যি আলাপ চালিয়ে যেতে পারবে। কথা বলার কারণে মনোযোগ নষ্ট হয়ে সিড়ি থেকে গড়িয়ে পড়বে না। এ ধরনের স্মৃতি সামান্য বৃদ্ধি পাওয়ার কথা জানিয়েছেন গবেষকেরা। তবে তাঁরা এটাও জানিয়েছেন, মাত্র তিন সপ্তাহের গবেষণায় কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন বোঝা সম্ভব নয়। এ জন্য আরও বেশি সময় নিয়ে গবেষণা করতে হবে।

তবে এ গবেষণা শেষে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ১৪ বছরের কম বয়সীদের স্মার্টফোন ব্যবহার না করা ভালো। এতে তারা দ্রুত ঘুমাতে পারবে। মনের অবস্থা তুলনামূলক ভালো থাকবে। পাশাপাশি তারা পরিবারের সঙ্গে বেশি সময় কাটাতে পারবে।

সূত্র: দ্য উইক জুনিয়র

Tags :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বশেষ

BDBanglaNews is the country’s most authentic news portal.

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক

গোলাম জাকারিয়া

নির্বাহী সম্পাদক

ফরহাদ খান 

লিগাল এডভাইজার

এডভোকেট সুরাইয়া শান্তা

বার্তা সম্পাদক

এলিভ অবন্ত 

যোগাযোগ

© 2025 BDBanglaNews24.net All Right Reserved.