
চয়ন আহমেদ, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি,বিডি বাংলা নিউজ২৪
সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন- কেইউজে ( রেজিঃ নং খুলনা -২০৬৯) এর আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (১৬ই জুন) দুপুর ২টায় কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের অস্থায়ী কার্যালয়ে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নামে সাংবাদিকদের কন্ঠ রোধ করার কালো আইন বাতিলের দাবিসহ সাংবাদিকদের সুরক্ষা আইন প্রনয়নের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, কালো আইন বাতিলের পাশাপাশি এই কালো আইনের আওতায় সকল মামলা প্রত্যাহারের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

আব্দুর রাজ্জাক বাচ্চু বলেন, আজ ১৬ জুন। সংবাদপত্রের কালো দিবস। জাতীয় ইতিহাসের অন্যতম কলঙ্কজনক দিন এটি। একদলীয় ‘বাকশাল’-এর দর্শন অনুসারে ১৯৭৫ সালের ১৬ জুন তৎকালীন সরকার চারটি সরকার নিয়ন্ত্রিত পত্রিকা ছাড়া বাকি সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দিয়েছিল।

সাংবাদিক সমাজ প্রতিবছর এ দিনটিকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। দেশ স্বাধীন হওয়ার মাত্র তিন বছর পার হতে না হতেই ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশের প্রথম স্বৈরাচার শেখ মুজিব সংসদে আনে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনী। এরই ধারাবাহিকতায় ওই বছর ১৬ জুন বিতর্কিত বাকশাল সরকার সকল সংবাপত্র বন্ধ করে দেয়। সরকারি প্রচারপত্র হিসেবে ৪টি পত্রিকা সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রকাশ করে। এতে হাজারো সাংবাদিক রাতারাতি বেকার হয়ে দুঃসহ জীবনে পতিত হয়।
তিনি আরও বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর স্বৈরাচার শেখ মুজিবের কন্যা স্বৈরাচার শেখ হাসিনা ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়েও শত শত মিডিয়া হাউস বন্ধ করে দেয়। এর মধ্যে অন্যতম আমার দেশ, দিগন্ত টিভি, চ্যানেল ওয়ান, ইসলামিক টিভি ইত্যাদি। ৫ আগস্ট ২০২৪ ছাত্র-জনতার সরাসরী অংশগ্রহণে সংঘটিত বিপ্লব আওয়ামী ফ্যাসিবাদের কবর রচনা করে বাংলাদেশ নতুন সফর শুরু করেছে। নতুন বাংলাদেশে সংবাদপত্র শতভাগ স্বাধীনতা ভোগ করবে, সেটাই হোক আজকের দিনের প্রত্যাশা।

ফ্যাসিবাদী আওয়ামী শাসন আমলে সাংবাদিক হত্যা, গুম ও মামলা দিয়ে হয়রানির ঘটনায় জড়িত সকলের বিচারের দাবি জানান কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন -কেইউজে’র সাধারণ সম্পাদক শামিম উল হাসান অপু। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সাংবাদিকদের দমন নিপীড়ন করেছে। যা দেশ ও জাতির জন্য লজ্জাজনক। আজ আমরা দেশে শেখ হাসিনা মুক্ত গণতন্ত্র বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের সরকারের গোপন তথ্য থাকার কারণে সাগর রুনি হত্যাকাণ্ড ঘটনা ঘটেছে। আমাদের কুষ্টিয়ার একজন সাংবাদিক রুবেলকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এইভাবে শত শত রুবেল শত শত সাগর রনি রক্ত দিয়েছে।
১৬ জুন কে স্মরণ করার পাশাপাশি তিনি আরো বলেন, সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। আসুন আমরা সবাই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করি। রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে থেকে আমরা সংবাদ পেশায় নিয়োজিত থাকি। সমাজের রন্ধে রন্ধে দুর্নীতি আমাদের লিখতে হবে। দেশ এবং জাতির জন্য উন্নয়নের জন্য, কল্যানের জন্য এই কালো দিবসকে সামনে রেখে আমরা সবাই শপথ গ্রহণ করি এবং অঙ্গীকার করি।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া এডিটরস ফোরামের সভাপতি ও দৈনিক কুষ্টিয়া দর্পণের সম্পাদক মুজিবুল শেখ।
কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন কেইউজে’র দপ্তর সম্পাদক এস এম মাহফুজ উর রহমানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া সাংবাদিক ইউনিয়ন -কেইউজে’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এমএ জিহাদ, কোষাধক্ষ্য এনামুল হক,এটিএন বাংলার কুষ্টিয়া প্রতিনিধি খন্দকার তুহিন আহম্মেদ, দৈনিক ইন্টারন্যাশনালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নাব্বির আল নাফিজ, দৈনিক কৃষি কন্ঠের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক সাকলায়েন এলিন, দৈনিক সময়ের দিগন্তের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মিরাজুল ইসলাম, দৈনিক সূত্র পাতের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক নাজমুল হাসান, সাপ্তাহিক পথিকৃৎ এর ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক শাহারিয়ার ইমন রুবেল, দৈনিক মানবজমিনের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি এজে সুজন, যমুনা টেলিভিশনের কুষ্টিয়া প্রতিনিধি রুহুল আমিন বাবু, গাজি টেলিভিশনে কুষ্টিয়া প্রতিনিধি কাজী সাইফুলসহ জেলায় কর্মরত বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
বিডিবিএন২৪/আরডি

