
স্পোর্টস ডেস্ক,বিডি বাংলা নিউজ২৪
এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ নির্ধারণের লড়াই যেন এক অলিখিত সেমিফাইনাল। সেখানে মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। যারা জিতবে, তারাই ফইনালে।
ভারতের বিপক্ষে বড় হারের পর শ্রীলংকাকে হারিয়ে পাকিস্তান ফিরেছে জয়ের ছন্দে। অন্যদিকে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ খুব একটা ধারাবাহিক না হলেও এ আসরে তরুণ-নির্ভর দল হিসেবে আত্মবিশ্বাস নিয়ে খেলছে। তবে ভারতের বিপক্ষে হারের পর স্বল্প বিরতিতেই আবার মাঠে নামতে হচ্ছে তাদের।
শ্রীলংকার বিপক্ষে রান তাড়া করতে গিয়ে পাকিস্তান ১২ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়েছিল। ১৩৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দল যখন ৫৭/৪, তখন ত্রাণকর্তা হয়ে আসেন হুসেইন তালাত ও মোহাম্মদ নওয়াজ। অপ্রত্যাশিত নায়ক হয়ে দু’জনের ব্যাটেই সহজ জয় পায় পাকিস্তান। তার আগে বল হাতে শ্রীলংকাকে চেপে ধরে রেখেছিল পাকিস্তানি বোলাররা।
নওয়াজের টুর্নামেন্টটা বেশ অদ্ভুত কেটেছে। পাকিস্তানের শেষ দুই ম্যাচে তাকে বোলার হিসেবে ব্যবহারই করা হয়নি, অথচ কোচ মাইক হেসন তাকে বিশ্বের সেরা স্পিনার বলে আখ্যা দিয়েছিলেন। তবে ব্যাট হাতে দু’বারই দলকে রক্ষা করেছেন তিনি। তালাতও গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বল ও ব্যাটে অবদান রেখেছেন—এক ওভারে নিয়েছিলেন দুই উইকেট, পরে খেলেছেন ম্যাচ বাঁচানো ইনিংস।
ভারতের বিপক্ষে হারের স্মৃতি ভুলে দ্রুত ঘুরে দাঁড়াতে চাইবে বাংলাদেশ। তবে এশিয়া কাপে ইতিমধ্যেই তারা হারিয়েছে আফগানিস্তান ও শ্রীলংকাকে। তারও আগে জুলাইয়ে ঘরের মাঠে পাকিস্তানকে ২-১ ব্যবধানে হারিয়েছিল তারা। পরপর তিনটি টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের ধারাবাহিকতা নিয়েই এসেছে এ আসরে।
ভারতের বিপক্ষে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের, তবে বোলাররা শেষদিকে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছিলেন। লেগস্পিনার রিশাদ হোসেন নেন প্রথম দুই উইকেট, পরে তানজিম হাসান সাকিব ও মুস্তাফিজুর রহমান কমিয়ে দেন রান তোলার গতি। ব্যাট হাতে সাইফ হাসানের টানা দুই অর্ধশতক আশার আলো জাগিয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনিও নজর কাড়তে চাইবেন। এর পাশাপাশি অভিজ্ঞ লিটন দাস ও তাসকিন আহমেদ ফিরলে দল আরও শক্তিশালী হবে।
বাংলাদেশে লেগস্পিনাররা চাপ সামলাতে পারে কিনা—এই প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন রিশাদ হোসেন। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিয়েছিলেন ১৪ উইকেট। এবার এশিয়া কাপেও ৪ ম্যাচে পেয়েছেন ৬ উইকেট, যার মধ্যে ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স রয়েছে। তিনিই প্রথম দুই উইকেট নেন এবং রানআউট করেন দাপুটে অভিষেক শর্মাকে। জাতীয় দলে অভিষেকের পর থেকেই বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি উইকেটশিকারি তিনি।
এশিয়া কাপে পাকিস্তানের সাফল্যের চাবিকাঠি হতে পারেন শাহীন শাহ আফ্রিদি। শুরুতেই উইকেট এনে দিলে শুধু দলের সুবিধাই হয় না, তিনিও নিজের রিদম ধরে রাখতে পারেন। ভারতের বিপক্ষে উইকেটশূন্য হলেও শ্রীলঙ্কার দুই ওপেনার কুশল মেন্ডিস ও পাথুম নিশাঙ্কাকে ফিরিয়ে ম্যাচের টোন সেট করেছিলেন। তাছাড়া ব্যাট হাতেও নিচের সারিতে অবদান রাখছেন তিনি।
সম্ভাব্য একাদশ
বাংলাদেশ দলে ফিরতে পারেন লিটন দাস ও তাসকিন আহমেদ। তাদের জায়গা করে দিতে বাদ পড়তে পারেন পারভেজ হোসেন ইমন ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন।
বাংলাদেশ (সম্ভাব্য): তানজিদ হাসান, সাইফ হাসান, লিটন দাস (অধিনায়ক ও উইকেটকিপার), তৌহিদ হৃদয়, শামীম হোসেন, জাকের আলি, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব, নাসুম আহমেদ, তাসকিন আহমেদ, মোস্তাফিজুর রহমান।
পাকিস্তান দলে সাইম আইয়ুবের বদলে দেখা যেতে পারে হাসান নওয়াজ অথবা খুশদিল শাহকে। আইয়ুব টুর্নামেন্টে পাঁচ ম্যাচে করেছেন মাত্র ২৩ রান।
পাকিস্তান (সম্ভাব্য): সাহিবজাদা ফারহান, ফখর জামান, সাইম আউব, সালমান আগা (অধিনায়ক), হুসেইন তালাত, মোহাম্মদ হারিস (উইকেটকিপার), মোহাম্মদ নওয়াজ, ফাহিম আশরাফ, শাহীন শাহ আফ্রিদি, হারিস রউফ, আবরার আহমেদ।
মাঠ ও পরিবেশ
দুবাইয়ের উইকেট ধীরগতির, প্রথমে ব্যাট করা দলের জন্য বেশ কঠিন। তাই গরমের কথা ভেবেও টস জিতে বোলিং নেওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
পরিসংখ্যান ও তথ্য
ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো টানা দুই ম্যাচে পাকিস্তানের হয়ে বল করেননি মোহাম্মদ নওয়াজ।
মোস্তাফিজুর রহমান টি-টোয়েন্টিতে ১৫০ উইকেট নেওয়া চতুর্থ বোলার হয়েছেন—তার আগে আছেন রশিদ খান, টিম সাউথি ও ইশ সোধি।
প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেন জাকের আলি, ভারতের বিপক্ষে গত ম্যাচে
বিডিবাএন২৪/আরডি



















