বিশ্বকবির জন্মবার্ষিকীতেশিলাইদহে নানান আয়োজন

নিউজ ডেস্ক,বিডি বাংলা নিউজ ২৪

আজ ২৫ বৈশাখ, বাংলাভাষা ও সাহিত্যের উৎকর্ষের নায়ক কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪তম জন্মবার্ষিকী। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অনন্য সাহিত্যকর্ম সৃষ্টিতে কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়ির রয়েছে বিশেষ অবদান।

ঠাকুর পরিবারের জমিদারি পরিচালনার জন্য এখানে এসে তিনি ভালোবেসে ছিলেন ছায়াঘেরা নিভৃত পল্লী শিলাইদহকে। এ ছাড়া আকৃষ্ট হয়েছিলেন এখানকার নৈসর্গিক দৃশ্য এবং প্রমত্তা পদ্মা নদী ও পদ্মার বুক থেকে বেরিয়ে আসা গড়াই নদীর প্রতি।

কলকাতার জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুরপরিবারে ১২৬৮ বঙ্গাব্দের ২৫ বৈশাখ (১৮৬১ সাল) তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মের ১৬৪ বছর পেরিয়ে গেলেও বাঙালির জীবন ও মানসে তার উপস্থিতি এখনো দেদীপ্যমান। তার লেখা ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ গান বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।

ছায়াঘেরা নিভৃত পল্লীর এই কুঠিবাড়ি এবং পদ্মা ও গড়াই নদীর বুকে রচিত হয়েছে কবির সাহিত্য কর্মের শ্রেষ্ঠাংশ। শিলাইদহের কুঠিবাড়ি কবির সাহিত্য কীর্তি ও নানা রচনার সঙ্গী। কবিগুরুর পদস্পর্শে শিলাইদহ গ্রামটি বিশেষ মর্যাদা ও পরিচিতি লাভ করে।

রবীন্দ্রনাথের রচনায় মানুষের সব আবেগ, অনুভূতি, আকাঙ্ক্ষা, অভিব্যক্তির অতুলনীয় প্রকাশ ঘটেছে। বাঙালির সব সমস্যা-সংকটে তার গান, কবিতা জুগিয়েছে সাহস ও প্রেরণা। সবকিছু ছাপিয়ে আছে তার শান্তি, কল্যাণ ও বোধের প্রতি সুগভীর প্রত্যয় ও নিরন্তর কামনা। একেই তিনি নানা রূপে ছড়িয়ে দিয়েছেন তার বহুমাত্রিক সৃজনকর্মে। সাহিত্যে তার নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তি বাংলা ভাষা ও বাঙালির জন্য বয়ে এনেছিল বিশ্বের গৌরব। যে গীতাঞ্জলির জন্য তার এ নোবেল পুরস্কার অর্জন, সেই গীতাঞ্জলি এবং আরও অনেক বিখ্যাত রচনা বর্তমান বাংলাদেশের মাটিতেই।

১৯০১ সাল পর্যন্ত তিনি নিয়মিত বিরতিতে এখানে জমিদারি পরিচালনা করেন। এই কুঠিবাড়ি থেকে তিনি পতিসর ও সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের জমিদারি দেখাশোনা করতেন। শিলাইদহে দীর্ঘ ১২ বছরের যাতায়াতে কবিগুরুর অনেক স্মৃতি এখানে তৈরি হয়েছে, যেগুলো আজও দৃশ্যমান।

কবি এখানে কাটিয়েছেন দিনের পর দিন, নির্জনে নিভৃতে লিখেছেন অসংখ্য কবিতা আর গান। এখানে বসে তিনি রচনা করেছেন সোনার তরী, চিত্রা, চৈতালীর মতো বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। ১৯১২ সালে এখানে বসেই ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের ইংরেজি অনুবাদ শুরু করেন। রবীন্দ্রনাথের উপস্থিতির কারণে শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে পায়ের ধুলা পড়েছে জগদীশ চন্দ্র বসু, দ্বিজেন্দ্রলাল রায়, প্রমথ চৌধুরীর মতো বিখ্যাত মানুষের। এই কুঠিবাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত ছিল বাংলা সাহিত্যের বিখ্যাত মানুষ মীর মশাররফ হোসেনের। ভ্রমণপিপাসু যে কারও কাছে শিলাইদহের কুঠিবাড়ি এক আরাধ্য বস্তু।

এবার জাতীয় পর্যায়ে কবির স্মৃতিবিজড়িত শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে উদযাপন করা হবে জন্মজয়ন্তী উৎসব। এ উপলক্ষে কুঠিবাড়িতে শুরু হচ্ছে তিন দিনের জাতীয় অনুষ্ঠান। সঙ্গে থাকছে গ্রামীণ মেলারও আয়োজন।

শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে শুরু হচ্ছে এ আয়োজন। এবারের প্রতিপাদ্য ‘রবীন্দ্রনাথ ও বাংলাদেশ’।

সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বর্ণিল এ অনুষ্ঠানমালা চলবে। এরই মধ্যে উৎসবকে কেন্দ্র করে প্রতিদিনই রবীন্দ্র কুঠিবাড়িতে বাড়ছে দর্শনার্থীদের ভিড়।

অনুষ্ঠানের জন্য কুঠিবাড়ির মূল চত্বরের ভেতর মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। এ অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মফিদুর রহমান।

কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো: তৌফিকুর রহমান বলেন, এ বছর কুঠিবাড়িতে জাতীয়ভাবে বিশ্বকবির ১৬৪তম জন্মোৎসব আয়োজন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। রবীন্দ্র উৎসবে দেশ-বিদেশ থেকে দর্শনার্থীরা আসেন কুঠিবাড়িতে। তাদের জন্য কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

Tags :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সর্বশেষ

BDBanglaNews is the country’s most authentic news portal.

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক

গোলাম জাকারিয়া

নির্বাহী সম্পাদক

ফরহাদ খান 

লিগাল এডভাইজার

এডভোকেট সুরাইয়া শান্তা

বার্তা সম্পাদক

এলিভ অবন্ত 

যোগাযোগ

© 2025 BDBanglaNews24.net All Right Reserved.