
চয়ন আহমেদ, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি,বিডি বাংলা নিউজ২৪
কুষ্টিয়ায় নতুন করে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে কোভিড। গত সপ্তাহে রাজধানী ঢাকা থেকে আসা দুজন কোভিড পজিটিভ রোগী ২৫০ শয্যা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়াও ঘরে ঘরে জ্বর, সর্দি ও কাশিতে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। এসব উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালসহ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। এ অবস্থায় সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
অপরদিকে, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের করোনা পরীক্ষার জন্য প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা একমাত্র পিসিআর ল্যাবের সব যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে বলে জানা গেছে। মাস খানেক আগে চুরির বিষয়টি টের পায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের ১৬ এপ্রিল কুষ্টিয়ায় করোনা শনাক্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণে একটি একতলা ছোট ভবনে পিসিআর ল্যাবের যাত্রা শুরু হয়। করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার পর এক বছর আগে পিসিআর ল্যাবের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এরপর হাসপাতালসংশ্লিষ্ট দুজন কর্মচারীকে ল্যাব দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) হোসেন ইমাম বলেন, করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসায় ওয়ার্ডগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পিসিআর ল্যাবে চুরির ব্যাপারটি স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘পিসিআর ল্যাবের সব যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে। এটা এক দিনে হয়নি। ধারণা করছি, গত চার মাস ধরে চুরির ঘটনা ঘটছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এক মাস আগে বিষয়টি টের পেয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি তাদের রিপোর্টও জমা দিয়েছে।’ ল্যাব বন্ধের পর দেখভালের জন্য যাঁদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের চরম অবহেলা রয়েছে বলে জানান এই চিকিৎসক।

তবে সাধারণ মানুষের দাবি, দ্রুত পিসিআর ল্যাব পুনরায় চালু করে সঠিকভাবে করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। কারণ, নতুন করে সংক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, আর এর সঙ্গে চুরি হওয়া যন্ত্রপাতির ঘটনায় জনমনে চরম হতাশা ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জেনারেল হাসপাতালের সহকারী রেজিস্ট্রার ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি ভয়াবহ না হলেও আমরা প্রস্তুত আছি। আইসোলেশন ওয়ার্ড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সম্প্রতি দুইজন করোনা পজিটিভ রোগী ভর্তি না হয়ে ফিরে গেছেন, যা থেকে সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ৮ মার্চ থেকে কুষ্টিয়ায় কোভিডে মারা গেছেন ৮৫৫ জন। আক্রান্ত হন ৪ হাজারের মতো। কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, ২০২১ সালের জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি রোগী মারা যান। এই মাসে জেলাটিতে ৩৪২ জন মারা যান। আগস্টের পর থেকে এই মৃত্যুর হার কমতে থাকে। এর মধ্যে শ্বাসকষ্ট ও অক্সিজেন সংকটে হাসপাতালেই ঝড়েছে অনেক প্রাণ।
বর্তমানে জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ২০ জন নারী-পুরুষ জ্বর, সর্দি, কাশি ও ঠান্ডাজনিত উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। সংশ্লিষ্ট নার্সরা তাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন।
বিডিবিএন২৪/আরডি

