
ঝিনাইদাহ প্রতিনিধি,বিডি বাংলা নিউজ২৪
ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা উপজেলার ৬ নং সারুটিয়া ইউনিয়ন বর্তমানে অবৈধ অস্ত্র, মাদক ও চোরাচালানের একটি গোপন ঘাঁটি হয়ে উঠেছে। সীমান্তবর্তী তিনটি জেলার সংযোগস্থল হওয়ায় এই এলাকা অপরাধীদের জন্য একটি কৌশলগত ‘রুটিং পয়েন্ট’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।
বিশেষ অনুসন্ধানে জানা গেছে, কুষ্টিয়া অঞ্চল থেকে সড়কপথ ও নদীপথে নিয়মিত মাদকের চালান আসে ঝিনাইদাহ জেলার শৈলকুপা থানার ৬ নং সারুটিয়া ইউনিয়নের কীর্তিনগর গ্রামে। এখান থেকেই এসব মাদক ছড়িয়ে পড়ছে পার্শ্ববর্তী জেলা কুষ্টিয়া, ঝিনাইদহ, রাজবাড়ী ও মাগুরায়।

🔴 শাহীন: ভয়ংকর অপরাধ নেটওয়ার্কের ‘গডফাদার’
এই চক্রের মূল হোতা হিসেবে উঠে এসেছে কীর্তিনগর গ্রামের নফর মণ্ডলের ছেলে শাহীন। সে একসময় ঢাকায় ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজিসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। পুলিশের হাতে একাধিকবার গ্রেফতার হয় এবং একবার তার কাছ থেকে অত্যাধুনিক বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। দীর্ঘদিন কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত হয়ে আবার এলাকায় ফিরে এসে পুরনো অপরাধী চক্র পুনর্গঠন করে।
বর্তমানে শাহীন এলাকায় মাদক ব্যবসা, অস্ত্র চোরাচালান, এবং জুয়ার বড় সিন্ডিকেট পরিচালনা করছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সে নিজেও নিয়মিত মাদক সেবন করে এবং তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস করে না। যুব সমাজকে মাদকে ভাসিয়ে ধ্বংস করছে সে ও তার চক্র।

🔴 ‘জুয়েল গ্যাং’: শাহীনের সহযোগী বাহিনী
শাহীনের সবচেয়ে বড় সহযোগী চক্র হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে জুয়েল গ্যাং। গ্যাংটি পরিচালনা করছে কানাই মণ্ডলের ছেলে জুয়েল, এই গ্যাং এর স্বয়ংক্রিয় সদস্যদের মধ্য রয়েছে সজীব,রাজীব, কাজেম,আবুজার,সালাম,ইউনুস কামাল,হাসমত,ইমন,রোমান, মহিরুদ্দি সাগর ও শাওন এরা প্রত্যেকেই মাদকাসক্ত। এবং প্রত্যেকে চাঁদাবাজির সাথে জড়িত এবং তারা বিভিন্ন লোককে থেকে চাঁদাবাজি করছে। চাঁদা না দিলে তারা অস্ত্র মাদক দিয়ে হয়রানি মূলক কর্মকাণ্ড করছে।জুয়েল গ্যাং সাথে বিভাগের একাধিক মাদক পাচারকারী ও অপরাধী সক্রিয়। শাহীনের কাছ থেকে মাদক ও অস্ত্র সংগ্রহ করে জুয়েল গ্যাং তা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে দেয়। খুলনা বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় তাদের সরবরাহ পৌঁছে যাচ্ছে নিরবচ্ছিন্নভাবে।
🔴 অপরাধী নেটওয়ার্কের সদস্যরা
এই নেটওয়ার্কে প্রত্যক্ষ সহযোগী হিসেবে কাজ করছে—
ইউনূস,ইউনূসের দুলাভাই জমিদার, নয়ন (সাত্তার মণ্ডলের ছেলে), সুজন (আতাহার জোয়ারদারের ছেলে),
ইউনূসের ভাগ্নে
তারা সবাই মাদক পাচারের বিভিন্ন পর্যায়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। তারা নিজেরাও মাদক সেবন করে ফলে অপরাধে জড়ানোর পাশাপাশি নিজেরাও ধ্বংসের পথে যাচ্ছে।
🔴 গোপন হাট: নদীর ধারে হস্তান্তরের স্থান
ঝিনাইদাহ শৈলকুপা থানার ৬নং সারুটিয়া ইউনিয়নের কীর্তিনগরের গড়াই নদীর তীরবর্তী একাধিক এলাকায় মাদক ও অস্ত্রের হাতবদল হয়—
ইউনূসের বাড়ি
নদীর পাশের ব্রিকফিল্ড
শ্মশানঘাট এলাকা
আশ্রয়ণ প্রকল্প এলাকা1
এই এলাকাগুলো এখন ‘হস্তান্তর পয়েন্ট’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, প্রভাবশালী ও অপরাধীদের মদদে এসব কর্মকাণ্ড দিনের পর দিন চলছে।

🔴 রাজনৈতিক ছত্রছায়া!
এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, এই চক্রটি স্থানীয় কিছু রাজনৈতিক মহলের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে দীর্ঘদিন ধরে নির্বিঘ্নে কাজ করছে। প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় অপরাধীরা আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
🔴 সমগ্র অঞ্চলে বিস্তার
শুধু শৈলকুপা নয়, এই চক্রের সরবরাহকৃত মাদক পৌঁছে যাচ্ছে কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী, মাগুরা ও ঝিনাইদহে। গোটা দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নিরাপত্তা ও সামাজিক কাঠামোকে হুমকির মুখে ফেলছে এই গ্যাং।
🟥 প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন
এলাকাবাসী প্রশাসনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছে—‘শাহীন ও জুয়েল গ্যাং’কে দ্রুত আইনের আওতায় এনে এলাকাটিকে মাদক ও অস্ত্রমুক্ত করতে হবে। দেরি হলে ভবিষ্যতে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে।
বিডিএন২৪/আরডি

