
চয়ন আহমেদ,কুষ্টিয়া প্রতিনিধি,বিডি বাংলা নিউজ২৪
অনিয়ম, দুর্নীতি আর মাদকের বিরুদ্ধে আপসহীন কলম চালিয়ে পরিচিত মুখ নাগরিক সাংবাদিক খাইরুল আলম রফিক। ‘দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ’ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে তাঁর সাহসী ও অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা সমাজের গভীরে প্রোথিত অন্ধকারকে বারবার উন্মোচন করেছে।
কিন্তু এই নির্ভীক পথচলাই তাঁকে ঠেলে দিয়েছে বিপদ আর ষড়যন্ত্রের মুখে। মাদক কারবারি ও দুর্নীতিবাজ চক্রের মিথ্যাচার, অপপ্রচার এবং এমনকি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তিনি। এই ঘটনাগুলো কেবল তাঁর ব্যক্তিগত নয়, বরং বাংলাদেশের স্বাধীন সাংবাদিকতা এবং মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য এক অশনি সংকেত। দেশ সেরা জনপ্রিয়, পাঠক নন্দিত দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক খায়রুল আলম রফিকের নির্ভীক সম্পাদনায় অনুসন্ধানী মূলক নিউজ, নিয়মিত ভাবে নির্ভয়ে প্রকাশ হচ্ছে।

পাশাপাশি প্রতিদিনের কাগজ ডিজিটাল সাইটে এক ঝাক তরুন সাংবাদিক জনাব খায়রুল আলম রফিকের সঠিক তত্ত্বাবধায়নে রাত দিন পরিশ্রম করে কাজ করে যাচ্ছে। যা আসলেই প্রশংসনীয়। কিন্তু পত্রিকার প্রিন্ট ভার্সন এবং প্রতিদিনের কাগজ ডিজিটালে নিয়মিত ভাবে অনুসন্ধানী মূলক এসব নিউজ প্রকাশের কারনে বারংবার নাগরিক সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিকের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হয়েছে। অপপ্রচারের শিকার হয়েছেন সাহসী এই কলমযোদ্ধা।
কিছু ব্যক্তি এবং গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে মাদক-দুর্নীতির সংবাদ প্রকাশ করায়, তাকে বিভিন্নভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতে তার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে চালানো হয়েছে অপপ্রচার। যা খায়রুল আলম রফিক স্যারের সুনাম এবং সম্মানকে করেছে প্রশ্নবিদ্ধ। এর আগে প্রায় ৭ মাস ধরে ফেসবুকে ভুয়া আইডি খুলে অশ্লীল ছবি এবং ভিডিও তৈরী করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক স্যারকে নিয়ে অপপ্রচার চালানো হয়।

অপপ্রচার এর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজ, ময়মনসিংহ অঞ্চলের আয়োজনে, ভুয়া আইডি ব্যবহারকারীকে সনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করা হয় এবং এই অপপ্রচারের দায়ে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানায় পর্নোগ্রাফি আইনের মামলা হলে পুলিশ অভিযান চালিয়েছে উক্ত মামলার ১নং আসামী সোবেদ আলী রাজা কে গ্রেপ্তার করে। এছাড়াও নাগরিক সাংবাদিক মোঃ খায়রুল আলম রফিক দীর্ঘদিন ধরে ময়মনসিংহের স্থানীয় মাদক সম্রাটদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেন দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ সাবেক দৈনিক ময়মনসিংহ প্রতিদিন ।
প্রতিবেদন প্রকাশের পরে ময়মনসিংহের চিহ্নিত মাদক কারবারী বিল্লাল হোসেন মানিক সহ একটি চক্র প্রায় তিন মাস ধরে সাংবাদিক রফিক কেই মাদক কারবারি বলে আখ্যা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে (ফেসবুক) তার সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে অপপ্রচার চালায়।
তবে সময়ের সাহসী কলমযোদ্ধা নাগরিক সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক এর বিরুদ্ধে করা মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন এই অপপ্রচারের কোনো স্পষ্ট প্রমাণ কিংবা সত্যতা পাওয়া যায়নি। কিন্তু সাংবাদিক খাইরুল আলম রফিকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো মোঃ বিল্লাল হোসেন মানিক (৩৮) নিজেই গত ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ইং তারিখে রাত প্রায় ১০:৫০ টার সময় ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের ২৮ নম্বর ওয়ার্ড, পশ্চিমপাড়ার একটি চায়ের দোকানের সামনে থেকে ৩৭ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট সহ র্যাব-১৪ (সিপিএসসি) অভিযানে গ্রেফতার হয়।
পরে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দীর্ঘদিন ধরে মানিক ময়মনসিংহ অঞ্চলে ইয়াবা ট্যাবলেট সহ বিভিন্ন মাদকের ব্যবসার সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল। র্যাব সূত্রে আরও জানা যায়, বিল্লাল হোসেন মানিক নিজেই স্থানীয়ভাবে একটি সক্রিয় মাদকচক্রের নেতৃত্ব দিতো এবং এলাকায় যুবসমাজকে মাদকে জড়াতে উৎসাহিত করত। তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকলেও সে কৌশলে আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পার পেয়ে আসছিল।

অবশেষে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে
ময়মনসিংহ থানায় হস্তান্তর করা। এবং তার বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সাহসী একজন কলমযোদ্ধা নির্ভীক সাংবাদিক খাইরুল আলম রফিক এভাবে মাদক কারবারি, দুর্নীতিবাজ ও ভুয়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে একের পর এক প্রতিবেদন প্রকাশ করার কারণেই মূলত চক্রটির গাত্রদাহ শুরু হয়। এবং তারাই সংঘবদ্ধ ভাবে দৈনিক প্রতিদিনের কাগজ সম্পাদকের বিরুদ্ধে কুৎসা রটানোর অপকর্মে নামেন। ফেক আইডি বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মনগড়া কথাবার্তা লিখে অন্যায়ের সাথে আপসহীন সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক কে বারংবার বিতর্কিত করার মাধ্যমে নিজেদের অপরাধ অপকর্ম ঢাকতে চেয়েছে অপরাধীরা।
সাংবাদিকতা কখনও কখনও পেশাগত দায়িত্বের বাইরে গিয়েও বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনই এক ভয়ংকর অভিজ্ঞতার মুখোমুখিও হয়েছিলেন সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক। ২০১৮ সালের শেষ দিকে তার সাথে ঘটে এক নির্মম ও ন্যক্কারজনক ঘটনা, যা শুধু তাঁর জীবনে নয়, দেশের গণমাধ্যম ও মানবাধিকারের পরিপ্রেক্ষিতেও এক দুঃসহ নজির হয়ে থাকে।
ঘটনার সময় ২৯ নভেম্বর ২০১৮, রাত আনুমানিক ১১টা। খায়রুল আলম রফিক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে অবস্থান করছিলেন। সেই সময় হঠাৎ করেই কয়েকজন ব্যক্তি তাকে ঘিরে ধরে, সাথে সাথে চোখ বেঁধে ফেলে এবং হাতে হাতকড়া পরিয়ে জোরপূর্বক একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। পরবর্তীতে তিনি জানতে পারেন, এরা ডিবি পুলিশের সদস্য, যাদের নেতৃত্বে ছিলেন এসআই আকরাম হোসেন। তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় ময়মনসিংহ শহরের চরপাড়া এলাকার একটি নির্জন স্থানে। সেখানে নিয়ে গিয়ে তার উপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। তারা তিন দিন ধরে তাঁকে হেফাজতে নিয়েছিলো এবং শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেছিলো তার উপর। যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
নির্যাতনের ফলে তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের মারাত্মক অবনতি ঘটে। তাকে জীবননাশের ভয় দেখিয়ে বলা হয় তোকে ক্রসফায়ারে দিব। তুই কিছুই করতে পারবি না। নির্যাতনের সময় তাঁকে কোনও মামলা ছাড়াই আটকে রাখা হয়।
সেই সময় তাঁকে বিবস্ত্র করে ছবি ও ভিডিও ধারণ করা হয়েছিলো বলে অভিযোগ করেন,সাংবাদিক খায়রুল আলম রফিক। এরপর তাকে আদালতে হাজির করা হয় এবং তিনি প্রায় দুই মাস কারাভোগ করেন। এই দীর্ঘ কারাভোগ তার পরিবার ও কর্মজীবনের উপর গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পরে তিনি জামিনে মুক্তি পান। এই ঘটনা স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর সরাসরি আঘাত এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের এক জঘন্য উদাহরণ।
“প্রতিদিনের কাগজ” পত্রিকার প্রধান সম্পাদক খাইরুল আলম রফিক বাংলাদেশের সাংবাদিকতা ও সংবাদপত্র শিল্পে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর নিরলস প্রচেষ্টা ও দূরদর্শী নেতৃত্ব ‘প্রতিদিনের কাগজকে’ কেবল একটি দৈনিক পত্রিকা নয়, বরং অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার এক নতুন দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। গতানুগতিক সংবাদের বাইরে গিয়ে গভীর অনুসন্ধানমূলক রিপোর্ট প্রকাশে তাঁর গুরুত্বারোপ আধুনিক সাংবাদিকতায় এক নতুন মানদণ্ড তৈরি করেছে। বস্তুনিষ্ঠ ও সাহসী সাংবাদিকতার মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব – এই বিশ্বাসকেই তিনি তাঁর কাজের মাধ্যমে বারবার প্রমাণ করেছেন। তাঁর এই আপসহীন ভূমিকা আজকের দিনের তরুণ সাংবাদিকদের জন্য এক অফুরন্ত অনুপ্রেরণার উৎস।
নির্ভীক খায়রুল আলম রফিকের ঘটনা বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এটি কেবল একজন সাংবাদিকের ব্যক্তিগত দুর্ভাগ্যের গল্প নয়, বরং সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা কতটা ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে এবং বিচারহীনতার সংস্কৃতি কীভাবে স্বাধীন মতপ্রকাশকে গ্রাস করতে পারে, তার এক জ্বলন্ত উদাহরণ। এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হলে ভবিষ্যতে আরও সাংবাদিক নিপীড়নের শিকার হবেন, যা মুক্ত গণমাধ্যম ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার জন্য এক অশনি সংকেত। মুক্ত গণমাধ্যম এবং স্বাধীন সাংবাদিকতা একটি সুস্থ গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য। এই অধিকার রক্ষা করা রাষ্ট্র এবং সমাজের সম্মিলিত দায়িত্ব।
বিডিবিএন২৪/আরডি

